মোঃ আশরাফ ইকবাল পিকলু মাজমাদার
খুলনা বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান।
কুষ্টিয়া পৌরসভার ৫ নাম্বর ওয়ার্ডে জিকে ক্যানাল ঘেঁষে গভীর রাতে অবৈধ ঘর নির্মাণের ঘটনা স্থানীয় এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাতের আধারে সুযোগ বুঝে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ক্যানালের খাস জমি দখল করে পাকা ও আধাপাকা স্থাপনা তৈরির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। যদিও দিনের বেলায় পিছু হটলেও অন্ধকার নামতেই আবার ফিরে আসে দখলদার গোষ্ঠী।
স্থানীয়দের ভাষ্য,আমরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই ক্যানালকে ঘিরে বসবাস করছি। এটি শুধু আমাদের সেচের লাইফলাইন নয়,বরং এলাকার প্রকৃতি ও পরিবেশের হৃদপিণ্ড। অথচ চোখের সামনেই রাতের আঁধারে এই খাল দখল করে ভবন গড়ে তোলা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, ক্যানালের পাশে টিনশেড ও ইট-সিমেন্টের কাঠামো দাঁড় করাতে ইতোমধ্যেই মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন করেছে একটি বিশেষ মহল। অভিযোগ উঠেছে, তারা কোনোরূপ অনুমোদন ছাড়াই দখল প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় সচেতন মহল আশঙ্কা করছে, এভাবে ক্যানাল ভরাট ও দখল চলতে থাকলে ভবিষ্যতে জলাবদ্ধতা,ড্রেনেজ সংকট ও বন্যার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডে এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,খাল ও ক্যানালের উপর যেকোন স্থাপনা সম্পূর্ণ বেআইনি। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে, খুব শীঘ্রই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
অপরদিকে এলাকায় চলছে ভিন্ন গুঞ্জন—কেউ কেউ বলছেন, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ‘মৌখিক সমঝোতা’ করেই এই কাজ চলছে। এজন্য স্থায়ী বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ আর হতাশা দুটোই পাশাপাশি বাড়ছে।
এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, খাল মরে গেলে শহর বাঁচবে কিভাবে? এই শহর নদী-খাল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে। রাতের অন্ধকারে যে খাল কাটা হচ্ছে, একদিন তার মাশুল দেবে পুরো শহর।
এদিকে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে,জিকে ক্যানাল শুধু সেচের জন্যই নয়,বরং আশেপাশের জীববৈচিত্র্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জলাধার। অবৈধ দখল রোধে প্রশাসনের পাশাপাশি নাগরিক সমাজকেও আরও দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে।
সব মিলিয়ে,রাতের আঁধারে চলতে থাকা এই দখলযজ্ঞ’থামাতে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে,কুষ্টিয়া শহরে এক বিপর্যয় আসন্ন এমনটাই মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।
এখন দেখার বিষয়,কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসন কতটা দ্রুত ও দৃঢ়ভাবে এই অবৈধ নির্মাণ রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
Leave a Reply