মোঃ অনিকুল ইসলাম উজ্জ্বল
বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া চাওড়া খালের উপর নির্মিত একটি কাঠের তৈরি ব্রীজ এখন দুটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের দৈনন্দিন চলাচলের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এবং হলদিয়ার বিশিষ্ট সমাজসেবক মো. মকবুল হোসেন খান ও নান্নু মোল্লাসহ এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নির্মিত এই ব্রীজটি মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব করেছে।
জানা যায়, হালকা যান নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে ৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের হলদিয়াহাট চাওড়া খালের উপর সেতুটি নির্মাণের জন্য ২০০৮ সালের নির্মাণ কাজ শুরু হয় মূল আয়রন ব্রিজটি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি হওয়ায় ১৫ বছরের মাথায় ২০২৪ সালের জুন মাসের মাঝামাঝি একটি মাইক্রোবাসসহ ভেঙে খালে পড়ে যায়।
সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসে থাকা ১২ জন যাত্রীর মধ্যে ৯ জন নিহত হন। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে এলাকার জনসাধারণকে আমতলী উপজেলা সদরে আসা-যাওয়া করতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হচ্ছিল।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পতন হলে আমতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মো. মকবুল হোসেন খান ও বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব নান্নু মোল্লা স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগিতায় কাঠ দিয়ে একটি অস্থায়ী ব্রীজ তৈরির উদ্যোগ নেন।
স্থানীয় জনসাধারণও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। বর্তমানে এই কাঠের ব্রীজটি দিয়েই টেপুরা, পূর্বচিলা, দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া, পশ্চিমচিলা, কাউনিয়া, কাপালী, চন্দ্রাওহলদিয়া গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করছেন।
তবে কাঠের তৈরি হওয়ায় এতে ভারী মালবোঝাই কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না, শুধুমাত্র যাত্রীবিহীন অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও পথচারীরা পারাপার হচ্ছেন।
হলদিয়া খালের ওপাড়ে রয়েছে ইউনিয়ন ভূমি অফিস, দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া দাখিল মাদরাসা, গুরুদল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হলদিয়া হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তক্তাবুনিয়া নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসা এবং একটি কমিউনিটি ক্লিনিক।
এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত চাকরিজীবী, শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা এই কাঠের ব্রীজ ব্যবহার করেই প্রতিদিন যাতায়াত করছেন।
রায়হান মোল্লা বলেন, জনগণের উদ্যোগে তৈরি কাঠের সেতু, বৃষ্টিতে কাঠ নষ্ট হয়ে গেছে দ্রুত এখানে স্থায়ীও ভাবে সেতু তৈরি করা দরকার তা না হলে আবারো যে কোন সময় বড় দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে।
হলদিয়ার বাসিন্ধা সমাজসেবক নান্নু মোল্লা বলেন, স্থানীয় উদ্যোগে এই কাঠের ব্রীজ তৈরি না হলে তাদের তিনগুণ পথ পাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতে হতো। তবে অতিবৃষ্টিতে কাঠ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তাই জরুরি ভিত্তিতে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন।
আমতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মো. মকবুল হোসেন খান বলেন, আমতলী সদরের সঙ্গে হলদিয়া ইউনিয়নের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পথ হল হলদিয়া সেতুটি। দ্রুত গার্ডার সেতু নির্মাণ করার দাবি জানাই।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, ২৩ কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরে গার্ডার সেতু স্থাপনের কাজ অনুমোদন করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এই মাসের মধ্যেই দরপত্র আহ্বান করা হবে। যাতে দ্রুত কাজ হয়, সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
Leave a Reply