মেহেদী হাসান হৃদয়,,
বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে অনলাইন জুয়ার বিস্তার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এই আসক্তির জালে জড়িয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনলাইন জুয়া শুধু ব্যক্তিগত আর্থিক ক্ষতির কারণ নয়, বরং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানসিক দিক থেকেও দেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠছে।
অনলাইন জুয়াতে অংশগ্রহণকারীরা স্বল্প সময়ে বড় লাভের আশায় বিপুল অর্থ হারাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ঋণগ্রস্ত হয়ে পরিবার ও সমাজে অশান্তি তৈরি হচ্ছে। দেশ থেকে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাও পাচার হচ্ছে, যা জাতীয় অর্থনীতিকে দুর্বল করছে।
জুয়া আসক্তির কারণে পারিবারিক সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ, সন্তানদের প্রতি উদাসীনতা ও সামাজিক অপরাধ বাড়ছে। অনেকেই টাকা জোগাড়ের জন্য প্রতারণা, চুরি, এমনকি সহিংস অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছে।
অনলাইন জুয়ার ফলে উদ্বেগ, হতাশা, ঘুমের ব্যাধি এবং মানসিক চাপ বেড়ে যাচ্ছে। তরুণদের পড়াশোনা ও কর্মজীবনে এর নেতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট।
বাংলাদেশে জুয়া আইনত নিষিদ্ধ হলেও অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, কড়া নজরদারি, প্রযুক্তিগত ব্লক ব্যবস্থা এবং জনসচেতনতা বাড়ানো ছাড়া এ সমস্যা মোকাবিলা কঠিন।
অনলাইন জুয়া শুধুমাত্র ব্যক্তির জন্য নয়, গোটা দেশের জন্য এক অদৃশ্য বিপদ। অর্থনৈতিক ক্ষতি, সামাজিক অশান্তি এবং মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি একত্রে দেশের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। তাই সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সমাজকে একসাথে কাজ করতে হবে অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে।
Leave a Reply