মো সালাম রাব্বানী
স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর
আজ রোববার (২৪ আগস্ট) দিনাজপুরে পালিত হলো ইয়াসমিন ট্রাজেডির ৩০তম বার্ষিকী। ১৯৯৫ সালের এই দিনে কতিপয় বিপথগামী পুলিশ সদস্যের হাতে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয় কিশোরী ইয়াসমিন। সেই ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অন্তত সাতজন নিরপরাধ মানুষ। এরপর থেকে দিনটি ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
দিবসটি উপলক্ষে দিনাজপুর মহিলা পরিষদ জেলা শাখার উদ্যোগে ইয়াসমিন চত্বর (দশমাইল মোড়) এলাকায় মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশ নারী আন্দোলনসহ বিভিন্ন নারী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আলোচনা সভা ও নানা কর্মসূচি পালন করে।
১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট রাতে দিনাজপুর থেকে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশ সদস্যরা ইয়াসমিনকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যা করে। ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন দিনাজপুরের সর্বস্তরের মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিক্ষোভ দমাতে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়, এতে সামু, সিরাজ, কাদেরসহ সাতজন নিহত হন।
ঘটনার পর সিআইডি এএসপি আফজাল আহমেদ বাদী হয়ে ৩ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তী তদন্তে তৎকালীন পুলিশ সুপারসহ ৯ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। নিরাপত্তাজনিত কারণে মামলাটি রংপুরে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০০৭ সালের ৩১ আগস্ট রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত এএসআই ময়নুল ইসলাম, কনস্টেবল আব্দুস সাত্তার ও পিকআপ চালক অমৃত লালকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। উচ্চ আদালতেও রায় বহাল থাকে এবং রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
প্রতি বছর এ দিবস ঘিরে দিনাজপুরসহ সারাদেশে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে ইয়াসমিনসহ সব নারী নির্যাতনের শিকারদের স্মরণ করা হয়। নারী নেত্রী ও মানবাধিকার কর্মীরা জানান, ইয়াসমিন ট্রাজেডি কেবল একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, এটি নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতির লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
Leave a Reply