মোঃ আশরাফ ইকবাল পিকলু মাজমাদার
দেশে সকল প্রকার রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগ অতি গোপনে ভিন্ন রুপ ও ভিন্ন ভাবে একত্র হয়ে সহিংসতা ও বিচ্ছিন্ন হামলার পরিকল্পনা করার আশঙ্কায় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারাদেশে আজ মঙ্গলবার ২৯ জুলাই থেকে টানা ১১ দিন ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছে। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) আশঙ্কা করছে চলতি মাসের শেষ কয়েকদিন থেকে আগামী ৮ আগস্ট পর্যন্ত মোট ১১ দিনকে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ এই গোষ্ঠী তথা আওয়ামী লীগের কর্মীরা অনলাইন ও অফলাইনে সংঘবদ্ধ প্রচারণার মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে। যেহেতু তাদের প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।এ সময়ে দলটির কিছু বিপদগামী নেতাকর্মী সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা,বিশৃঙ্খলা কিংবা ভাঙচুর চালাতে পারে বলেও ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এই প্রেক্ষাপটে সোমবার ২৮ জুলাই পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে একটি বিশেষ সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে পুলিশের বিশেষ শাখা। তত মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ভাবে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে ডিএমপি কমিশনার,সিটি এসবি,বিভাগীয় উপ- পুলিশ কমিশনার,চট্টগ্রাম ও খুলনার স্পেশাল পুলিশ সুপার সহ দেশের সব জেলা পুলিশ সুপারের বরাবরে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে,ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকার,রাজনৈতিক দল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সামাজিক সংগঠন গুলো ১লা জুলাই থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি ধারাবাহিক ভাবে পালন করছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার ২৯ জুলাই থেকে আগামী ৮ আগস্ট পর্যন্ত এই ১১ দিনের সময়কে ‘বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ’ মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, এই ১১ দিনের মধ্যে ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলো দেশব্যাপী অনলাইন ও অফলাইনে উসকানিমূলক প্রচারণা চালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদবিরোধী কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে বা উসকানি সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টাও হতে পারে বলেও ধারণা করা হয়েছে। এমতবস্থায় এই পরিস্থিতিতে দেশের সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সকল সংশ্লিষ্ট ইউনিটকে নিজ নিজ এলাকায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ,সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও যানবাহনের ওপর নজরদারি,সরকারি বেসরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার এবং সাইবার গোয়েন্দা কার্যক্রমের উপর তীব্র নজরদারি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের দাবি,আওয়ামী লীগের কিছু যুব ও ছাত্রসংগঠনের নেতারা মাঠে না থাকলেও অনলাইনে ভার্চুয়ালী শক্তিশালী স্কোয়াড গড়ে তুলেছে। যারা ফেসবুক, টেলিগ্রাম ও ইউটিউবভিত্তিক চ্যানেল চালিয়ে সামাজিক অস্থিরতা ছড়ানোর মতো অপকর্মের কাজে সক্রিয় ভাবে লিপ্ত। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গণমাধ্যমে বলেন,আওয়ামী লীগের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। দেশ থেকে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে এনে রাজনৈতিক নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে। তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। যারা দেশে-বিদেশে বসে পরিস্থিতি অশান্ত করার পরিকল্পনায় লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এমন সতর্ক বার্তা রিতীমত দেশের রাজনৈতিক মহল ও জুলাই আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ এবং দেশের সাধারণ মানুষের মনে এক ভিন্ন ধরনের শঙ্কায় ফেলে দিয়েছেন। জুলাই আন্দোলনের প্রথম সারির কর্মীরা প্রতিবেদককে জানান,যে কোন মূল্যে পতিত স্বৈরাচার গোষ্ঠীর অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাবেন তারা। প্রয়োজনে আরও একটি বিপ্লব ঘটবে বাংলাদেশে তবুও হার মানবে না অর্জিত স্বাধীনতার সৈনিকেরা।
জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতা ও জামায়াতে ইসলামীরও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথে কথা বললে তাঁরাও জানান, দেশের কেন সংকটময় মুহূর্তে আমরা দেশবাসীর সাথে আমরাও ঐক্যবদ্ধ ছিলাম এবং আছি। কোন অবস্থায় এই বাংলাদেশে স্বৈরাচারীর পুনুত্থান হতে দেয়া হবে না। যে কোন মূল্য অর্জিত স্বাধীনতার রক্ষা করা হবে। একই সাথে এই দুই দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন,দেশের সকল মিডিয়ার ভূমিকা কি হচ্ছে এবং কোন মত পথ আদর্শের সংবাদ প্রকাশ করছে তা আমরা লক্ষ্য করছি। মুক্ত বাংলাদেশে জবাবদিহিতার আওতায় অনুসন্ধানী ও মানুষের অধিকার নিয়ে এবং অন্যায় অপরাধ ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে কলম তুলুন ও আইনানুগ ভাবে প্রতিহত করার জন্য জাতির সামনে আনুন এতে কারোরই আপত্তি নেই এবং থাকবেও না কেননা আপনারা অতীতের তুলনায় মুক্ত কণ্ঠে কথা বলার স্বাধীন দেশ পেয়েছেন কিন্তু কোন কারণে স্বৈরাচারের পক্ষে কিংবা তাদের প্রমোট করার উদ্দেশ্যে যদি এখনও এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন তবে সে যেই হোক তাকে কোন অবস্থায় ছাড় দেবে না বাংলাদেশের আপমর সাধারণ মানুষ।
Leave a Reply