বিশেষ প্রতিবেদন |
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট সার্কেল ভূমি অফিস এখন সাধারণ মানুষের জন্য নয়—এটি পরিণত হয়েছে দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের গোপন ঘাঁটিতে। ভূমি সেবা নিতে এসে অসহায় হয়ে পড়েছেন হাজারো ভুক্তভোগী। ঘুষ, দালাল, রাজনৈতিক প্রভাব এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন—সবকিছু মিলে একটি “সিস্টেমেটিক দুর্নীতির কারখানায়” পরিণত হয়েছে সরকারি এই অফিস।
গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়েছে দুর্নীতির চিত্র
দক্ষিণের অপরাধ সংবাদের অনুসন্ধানে পাওয়া ৪০ মিনিটের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে:
নামজারির জন্য অফিসে অপেক্ষমাণ এক ব্যক্তিকে ঘুষ না দিলে “সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়” বলা হয়।
এসিল্যান্ড মো. বাসিত সাত্তার ফোনে নির্দেশ দেন—“তাড়াতাড়ি মিটমাট করো”।
নগদ অর্থ হাতে নেওয়ার পর ঘুষের অঙ্ক অনুযায়ী ফাইল অগ্রসর করা হয়।
সরাসরি সেবা নয়, সবকিছু চলে দালালের মাধ্যমে
ভুক্তভোগীদের দাবি, ক্যান্টনমেন্ট সার্কেল অফিসে দালাল ছাড়া কোনো সেবা পাওয়া সম্ভব নয়।
পরিচিত কিছু দালাল প্রতিনিয়ত অফিসে ঢুকছে ও দর কষাকষি করছে।
সাধারণ জনগণকে বলা হচ্ছে, “দালাল ছাড়া নামজারি করানো যাবে না।”
এমনকি অফিসের কিছু কর্মচারীও দালাল সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন বলে অভিযোগ।
সরকারি অফিস নয়, যেন ব্যক্তিগত সাম্রাজ্য!
বিকেল ৫টার পর অফিস গেটে তালা ঝুললেও ভেতরে চলে গোপন বৈঠক।
বসুন্ধরা, আসিয়ান সিটি, যমুনা গ্রুপের লোকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে।
এসিল্যান্ড বাসিত সাত্তার সরকারি দপ্তরকে ‘নিজের অফিসে’ পরিণত করেছেন বলে অভিযোগ।
ঘুষ লেনদেনের দৃশ্য
ফাইল হাতে ঘুষের অঙ্ক নিয়ে দর কষাকষি
দালালের মাধ্যমে ফাইল আগানো
সাংবাদিকদের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে!
এসিল্যান্ড বাসিত সাত্তার নিজেকে বিএনপির নেতা মির্জা আব্বাসের আত্মীয় দাবি করে বলেন:
“টিভি মিডিয়া আমার হাতে। আমি চাইলে সমস্যার ভেতর সমস্যা তৈরি করতে পারি।”
ঘুষ ছাড়া নামজারি হয় না
অফিসে সরাসরি সেবা বন্ধ,দালাল ছাড়া প্রবেশ নিষেধ
রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার,সাংবাদিকদের হুমকি।
ভুক্তভোগীদের দাবি:
“কাগজ ঠিক থাকলেও ঘুষ না দিলে কাজ হয় না। ফাইল বাতিল করে হাজারো অজুহাত দেয়।”
জনগণের প্রশ্ন:
এত অভিযোগ, ফুটেজ, অডিও থাকার পরও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিরব কেন?
তাদের চোখে কি কাঠের চশমা?
দ্রুত এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ক্যান্টনমেন্ট সার্কেল ভূমি অফিস সাধারণ মানুষের জন্য আরও ভয়ংকর হয়ে উঠবে।
–
Leave a Reply