দৌলতখানের নেয়ামতপুর ও মদনপুর ইউনিয়নে জমি দখল, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, গরু চুরি ও মাদক ব্যবসায় জনজীবন বিপর্যস্ত
ভোলা প্রতিনিধি | দৈনিক দক্ষিণের অপরাধ সংবাদ:
ভোলার দৌলতখান উপজেলার নেয়ামতপুর ও মদনপুর ইউনিয়নে চরম নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে। সরকার পরিবর্তনের সুযোগকে পুঁজি করে ‘বশির মেম্বার’ নামধারী এক ব্যক্তি এলাকায় নিজেকে নেতা হিসেবে উপস্থাপন করে জমি দখল, মাদক কারবার, চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পুরো ইউনিয়নে ত্রাস সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বশির মেম্বার ও তার সহযোগীরা আদালতের স্পষ্ট রায় উপেক্ষা করে প্রায় ৩৫০ বিঘার অধিক জমি জোরপূর্বক দখল করেছেন। এসব জমির প্রকৃত মালিক দরিদ্র কৃষক ও মৎস্যজীবী পরিবার, যারা বছরের পর বছর এই জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন তারা জমিতে যেতে পারছেন না, অনেকে প্রাণভয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, বশির মেম্বারের প্রত্যক্ষ মদদে নেয়ামতপুর মদনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে চলছে ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজার অবাধ বিকিকিনি। মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোর-তরুণরা। এতে অভিভাবকদের মাঝে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
এতেও থেমে থাকেনি অপরাধচক্র। স্থানীয় বাজার, দোকান, মাছ ধরার জাল, কৃষকের ফসল, এমনকি বাড়ির গাছ থেকেও চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে তার বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর এবং গবাদি পশু চুরির মতো ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।
বিশেষ করে, মদনপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলে হাজার হাজার গরু-মহিষ পালনকারী জমির মালিকদের কাছ থেকে বশির মেম্বার ও তার ছেলে প্রতি মহিষে বছরে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা চাঁদা দাবি করছেন। কেউ টাকা না দিলে রাতের অন্ধকারে সশস্ত্র সন্ত্রাসী পাঠিয়ে গবাদিপশু চুরি করে অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই অপরাধচক্রের পেছনে রয়েছে সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নান্নুর মদদ, যার বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলা বর্তমানে বিচারাধীন। স্থানীয়রা বলছেন, বশির ও নান্নু মিলে মদনপুর ইউনিয়নে একপ্রকার সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন, যা পুরো ইউনিয়নজুড়ে আতঙ্ক ও অস্থিরতা ছড়িয়ে দিচ্ছে।
প্রতিদিনের অপরাধ, জুলুম আর নির্যাতনে এলাকাবাসী আজ দিশেহারা। কেউ মুখ খুললে হুমকি, হামলা ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। ফলে সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন।
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাফেজী ইব্রাহীম সাহেবের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
তাদের দাবি—
সরকারি তদন্তের মাধ্যমে বশির মেম্বার ও তার গডফাদারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। যেন ভবিষ্যতে আর কেউ গরিব-দুঃখী মানুষের জীবনের সাথে এমন নির্মম প্রতারণা করতে না পারে।”
দৈনিক দক্ষিণের অপরাধ সংবাদ,ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা প্রশাসনের প্রতি জোর আহ্বান জানাচ্ছে, নেয়ামতপুর ও মদনপুর ইউনিয়নের এই দুর্নীতিবাজ, দখলদার ও অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে এলাকাবাসীর জানমালের নিরাপত্তা ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিন।
Leave a Reply