বরিশাল বিভাগীয় প্রদান :
ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার চর কচুয়া ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে আনিসুল হক গাজী ও তার পরিবার পরিচালিত একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী চক্র। এলাকাবাসীর অভিযোগ, হত্যা, চাঁদাবাজি, জমি দখল, নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত এই চক্রের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত কোনো সদস্যকে গ্রেপ্তার করেনি লালমোহন থানা পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৮ জুন ২০২৫ ইং তারিখ রাতে আনিসুল হক গাজী, তার ছেলে আরিফ, রাকি ও শাকিল মিলে চর কচুয়ার ২ নম্বর ওয়ার্ডের এক খেটে খাওয়া কৃষক ফাহিম (পিতা: রুহুল আমিন হেজু) এর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। ফাহিম তা দিতে অস্বীকার করলে সন্ত্রাসীরা তাকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে, পরে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয় আনিসুল হকের বাড়িতে। ঘটনাটি ভোলা জেলা আদালত ও লালমোহন থানায় হত্যা মামলা আকারে রুজু হলেও এখন পর্যন্ত প্রধান আসামি আনিসুল হক গাজী কিংবা তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।
শুধু ফাহিমের হত্যাকাণ্ডই নয়, ৭ জুলাই ২০২৫ তারিখ দুপুর ১টা ২০ মিনিটে চর কচুয়ায় একটি জমি সংক্রান্ত শালিশ বৈঠক চলাকালে আনিসুল হক ও তার পরিবারের সদস্যরা— আরিফ, রাকি, সাকিল, সুরমা, রিন এবং আনিসুল হকের মেয়ে— ধারালো অস্ত্র ও অগ্নিসস্ত্রসহ অতর্কিতে জমির মালিক ও সালিশদের ওপর হামলা চালায়। এতে হুমায়ুন (পিতা: মৃত হাবিবুল্লাহ, কাইচচা ইউনিয়ন), ফরিদ এবং হারুন (পিতা: তোফাজ্জল হোসেন) গুরুতর আহত হন।
চরের সাধারণ মানুষ জানান, দীর্ঘদিন ধরে আনিসুল হক গাজী বাহিনী চর কচুয়ায় একপ্রকার ‘অঘোষিত রাজত্ব’ কায়েম করেছে। তারা মোটা অঙ্কের চাঁদা না দিলে কৃষকদের জমিতে চাষ করতে দেয় না, কোনো প্রকার প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর চালানো হয় বর্বর নির্যাতন। জমির মালিক ও চাষীরা জানান, তারা কার্যত জিম্মি হয়ে পড়েছেন এই চক্রের হাতে।
অভিযোগ রয়েছে, নিজের অপরাধ ঢাকতে এবং ভয়ভীতি দেখাতে আনিসুল হক গাজী একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেছেন শালিশে অংশ নেওয়া নিরীহ কয়েকজন কৃষকের বিরুদ্ধে।
এতে এলাকাবাসীর মাঝে প্রশ্ন উঠেছে— যেখানে এই চক্রের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে, সেখানে তারা কীভাবে থানায় গিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে পারে? থানার নীরবতা ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় সন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
ভুক্তভোগী ও চর কচুয়ার শত শত বাসিন্দা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অবিলম্বে আনিসুল হক গাজী ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।
Leave a Reply