মোঃ অনিকুল ইসলাম উজ্জ্বল
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার রণগোপালদী ইউনিয়নের আউলিয়াপুর গ্রামে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। মাত্র ১২ বছরের এক শিশু, মোঃ বায়েজিত মুনতাহা হাওলাদার, সুপারি গাছে উঠতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে ঘটে যায় এই হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনাটি।
বায়েজিত স্থানীয় ২২নং মধ্যগুলি আউলিয়াপুর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র এবং রণগোপালদীইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের শফিক হাওলাদারের একমাত্র সন্তান। বায়েজিতের মা দুই বছর আগে মারা গেছেন। সেই শোক এখনো কাটেনি পরিবারের। অথচ এবার বাবার বুক থেকে ছিনিয়ে নিল একমাত্র ছেলেকে এক মুঠো সুপারি।বিদ্যালয়ের পাশে হাজি বাড়ির এক নারী, মোসাঃ নিলুফা বেগম, নিজের গাছের সুপারি পারতে বায়েজিতকে ডাকেন। শিশুটি রাজি হয়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস,গাছের মাথায় ওঠার পর পা ফসকে নিচে পড়ে যায় সে। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে দশমিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, সব শেষ।
নিহতের চাচাতো ভাই শিবলু হাওলাদার বলেন, আমার ভাই ভারী ছিল। মা’রে দুই বছর আগে হারাইছে। আজ শুনলাম, এক মহিলা নাকি টাকার লোভ দেখায়া গাছে উঠাইছে। পরে ভাইটা নিচে পড়ছে। হাসপাতালে যাইয়া দেখি, ভাইটা আর নাই। দশমিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল আলিম জানান, ঘটনার পর পুলিশ হাসপাতালে যায়। একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন। একটি গাছের কিছু সুপারি, আর এক শিশুর প্রাণ! অবুঝ শিশুকে টাকার লোভ দেখিয়ে বিপজ্জনক কাজে পাঠানো কতটা মানবিক,এই প্রশ্নের উত্তর সমাজের প্রতিটি মানুষের বিবেককে নাড়া দিচ্ছে।বায়েজিতের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শুধু একটি পরিবার নয়, গোটা গ্রাম হারিয়েছে এক হাসিখুশি শিশুকে। আল্লাহ তায়ালা যেন বায়েজিতকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন এবং শোকাহত পরিবারকে এই অপূরণীয় ক্ষতি সহ্য করার শক্তি দেন। আমিন।
Leave a Reply