1. mh01610093622@gmail.com : dainikdakshineroporadh :
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
অনিয়মের খবর সংগ্রহ কালে সাংবাদিকের উপর হামলার তজুমদ্দিনে জলকপাট নির্মাণে অনিয়ম অনুসন্ধানে গিয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছিত, একজন গ্রেফতার কুষ্টিয়া – জগতি রেল স্টেশনকে সংস্কার করে ঐতিহাসিক রেল জাদুঘরে পরিণত করা হলে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্প, দুর্বিষহ দিন কাটছে কারিগরদের বহুল আলোচিত ও কুখ্যাত ডাকাত জসিম ওরফে কালো জসিমকে অবশেষে গ্রেফতার ত্যাগ-তিতিক্ষার পথ বেয়ে অবহেলার গ্লানিতে হারিয়ে যাওয়া এক নেতার গল্প যশোর জজ কোর্টের পুলিশের কাছ থেকে পালিয়েছে হত্যা মামলার আসামি আগামি ২৪ ঘণ্টায় ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা, ডুবতে পারে দেশের ১০টি জেলা দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নে দীঘিনালা সেনা জোনের বিনামূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্প
সংবাদ শিরোনাম:
অনিয়মের খবর সংগ্রহ কালে সাংবাদিকের উপর হামলার তজুমদ্দিনে জলকপাট নির্মাণে অনিয়ম অনুসন্ধানে গিয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছিত, একজন গ্রেফতার কুষ্টিয়া – জগতি রেল স্টেশনকে সংস্কার করে ঐতিহাসিক রেল জাদুঘরে পরিণত করা হলে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্প, দুর্বিষহ দিন কাটছে কারিগরদের বহুল আলোচিত ও কুখ্যাত ডাকাত জসিম ওরফে কালো জসিমকে অবশেষে গ্রেফতার ত্যাগ-তিতিক্ষার পথ বেয়ে অবহেলার গ্লানিতে হারিয়ে যাওয়া এক নেতার গল্প যশোর জজ কোর্টের পুলিশের কাছ থেকে পালিয়েছে হত্যা মামলার আসামি আগামি ২৪ ঘণ্টায় ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা, ডুবতে পারে দেশের ১০টি জেলা দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নে দীঘিনালা সেনা জোনের বিনামূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্প

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্প, দুর্বিষহ দিন কাটছে কারিগরদের

  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫
  • ৪২ বার ভিউ

ফাহিম হোসেন রিজু
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

আধুনিক বিশ্বায়নের ফলে তুলনামূলক কম দামে অধিক টেকসই সিলভার, মেলামাইন ও প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে মাটির তৈরী বিভিন্ন সামগ্রীর চাহিদা দিনদিন কমে যাওয়ায় দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্প। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এক সময়ের চাহিদার তুঙ্গে থাকা মৃৎশিল্প কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে মৃৎশিল্পের কারিগরদের অর্ধাহারে অনাহারে দুর্বিষহ দিন কাটছে। সংসার চালাতেও হিমশিম খাচ্ছেন তারা। ভালো নেই তাদের সামাজিক সহ পারিপার্শ্বিক অবস্থানও।

ঐতিহ্যের ধারক মৃৎশিল্পের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ‘মৃৎশিল্প’ শব্দটি ‘মৃৎ’ এবং ‘শিল্প’ এই দুই শব্দের মিলিত রূপ। ‘মৃৎ’ শব্দের অর্থ মৃত্তিকা বা মাটি আর ‘শিল্প” বলতে এখানে সুন্দর ও সৃষ্টিশীল বস্তুকে বোঝানো হয়েছে। এজন্য মাটি দিয়ে দিয়ে তৈরি সব শিল্পকে কর্মকেই মৃৎশিল্প বলা যায়। এই ধরণের কাজের সাথে জড়িত তাদেরকে কুমার বা কুম্ভকার বলা হয়। মৃৎশিল্প মানুষের প্রাচীনতম আবিষ্কার। খ্রিষ্টপূর্ব ২৯ হাজার থেকে ২৫ হাজার অব্দের নব্যপ্রস্তর যুগে এর সূচনা। ইতিহাস অনুযায়ী চীনের বিখ্যাত শহর থাংশান এ মৃৎশিল্পের জন্ম হয়েছিল। আর এ কারণেই এ শহরটিকে মৃৎশিল্পের শহর বলা হয়। নব্যপ্রস্তরযুগে চেক প্রজাতন্ত্রে গ্রাভেতিয়ান সভ্যতার ডলনে ভোসনিসে, জাপানের জোমোন (খ্রিষ্টপূর্ব ১০,৫০০), রাশিয়ার সর্ব পূর্বে (খ্রিষ্টপূর্ব ১৪,০০০), সাব-সাহারান দক্ষিণ আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকায় এর আবিস্কারের তথ্য পাওয়া যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, পূর্ব পুরুষদের পেশা ধরে রাখতে এখনো অনেক পরিবার তাদের হাতের নান্দনিক ছোঁয়ায় মাটির থালা-বাসন, হাঁড়ি-পাতিল, ঘটি-বাটি, বদনা, পুতুল, ফুলের টব, ফুলদানী, জীবজন্তু, পাখিসহ বাংলার চিরাচরিত সব নিদর্শণ তৈরি করছেন। দুই এক বছর আগেও এই উপজেলায় প্রায় শতাধিক কুমার পরিবার ছিল। কিন্তু বাজারের মৃৎশিল্পের কদর কমে যাওয়ায় পেশাগত পরিবর্তনের কারণে তা অনেকটাই কমে গেছে। এখনো সবচেয়ে বেশি কুমার পরিবারের বসবাস উপজেলার পালপাড়া, গোবিন্দপুর, পাঁচপীর ও কুমারপাড়া গ্রামে। গ্রামগুলোতে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ টির মতো পরিবার এখনো টিকে আছে, যারা বাপ দাদার পেশাকে আঁকড়ে ধরে আছেন হাজার প্রতিকূলতার মধ্যেও।

উপজেলার পাঁচপীর গ্রামের তেমনি এক পরিবারের সদস্য নীলকান্ত (৭৮) বলেন, এই শিল্পটি আর আগের মত নেই। স্টিল, সিরামিক, মেলামাইন, প্ল্যাস্টিক ও সিলভারের তৈজসপত্রের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এখন মাটির জিনিষের চাহিদা নাই বললেই চলে। বেচা-বিক্রি কমে গেছে। এই এলাকায় এখন আর মাটি পাওয়া যায় না। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মাটি ভ্যানে করে কিনে আনতে হয়। তাতে করে মাটির দাম, ভ্যান ভাড়ার খরচ বেড়ে যায়। সেই অনুযায়ী আয় হয় না।

তিনি আরও জানান, অনেকেই পেশা বদল করছেন। সরকার থেকে আমরা কোনো সাহায্য সহযোগিতা পাইনা। আগে এই এলাকার প্রায় অধিকাংশ পরিবারই এই কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। এখন মাত্র ৬০ থেকে ৭০টি পরিবার এই কাজের সাথে যুক্ত আছি। আমরা যারা এই পেশার মায়া ছাড়তে পারছি না, তারা কষ্ট হলেও বাপ-দাদার এই পেশাটাকে ধরে রেখেছি।

উপজেলার কুমারপাড়া গ্রামের কুমার পরিবারের সদস্য সান্তনা রানি জানান, শুধু শুনেই থাকি এই শিল্পের কারিগরদের জন্যে নাকি বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা সহ সরকার থেকে অনেক সুবিধা দেয়। কিন্তু বাস্তবে কিছুই পাইনা। শুনেছি সমাজসেবা অফিস থেকে নাকি এই মাটির জিনিসপত্র তৈরির প্রশিক্ষণ দেয় এবং প্রশিক্ষণ শেষে ঋণও দেয়। কিন্তু আমরা তো শিক্ষিত না যে এত কিছু বুঝবো। তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত অনেক লোকই আসছে, যারা শুধু এসে নাম, ঠিকানা আর ছবি তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়না।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা (অ.দা.) আব্দুল আউয়ালের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে এই শিল্পের জন্যে প্রশিক্ষণ বা আর্থিক অনুদান বিষয়ক কোনো প্রকল্প এখনো ঘোড়াঘাটে আসেনি। যখন আসবে তখন সমাজসেবা অফিস থেকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করবো। পাশাপাশি যদি সরকারি অনুদান আসে, সেই অনুদানও তারা পাবেন।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কুমাররা বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। সরকার সর্বস্তরের পেশার জনগণের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুবিধা প্রদানের চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাদের তৈরি সামগ্রী গুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিনিয়ত বিক্রি করতে পারে দ্রুত সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করার চেষ্টা করছি।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এই উপজেলায় মৃৎশিল্পের জন্য সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা নেই। পরবর্তীতে মৃৎশিল্প নিয়ে সরকারি প্রকল্প আসলে সেই প্রকল্পের সর্বোচ্চ সুবিধা যাতে তারা পায় তার ব্যবস্থা করবো।

ক্যাপশন: মাটির তৈরী সামগ্রীর চাহিদা কমে যাওয়ায় দুর্বিষহ দিন কাটছে মৃৎশিল্প কারিগরদের।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Desing & Developed BY ThemeNeed.com