বোচাগঞ্জ/দিনাজপুর প্রতিনিধি
কেক খেতে কে না পছন্দ করে, ছোট থেকে বড় সবার কাছে কেক মানে আলাদা একটা ভালোলাগা। শুধু তাই নয়, বর্তমানে যে কোন দিবস উপলক্ষে বা খুশির দিনে কেক কাটা হয়ে থাকে। আর এই কেক তৈরি করে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হয়েছেন দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার মেয়ে সিনথিয়া ঝলক। এখন নিজের হাতের বানানো এই কেক বিক্রয় করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আয় করেন তিনি।
সফল নারী উদ্যোক্তা সিনথিয়া ঝলক বলেন, আমি স্ব-নির্ভরশীল হওয়ার জন্য ২০১৫ সালে “চিলড্রেন কেয়ার কোচিং সেন্টার” নামে একটা কোচিং সেন্টার চালু করি। সেখানে আমার তত্ত্বাবধানে ২ জন শিক্ষক ছিল। অনেক ভালো নাম ডাক হয়েছিল কোচিং সেন্টারের। কিন্তু করোনার শুরুর পর থেকে কোচিং সেন্টারটি বন্ধ রাখার কারণে ধস নামা শুরু করে। ছাত্র-ছাত্রী অনেক কমে যায়। তখন কোচিং সেন্টারটি আমি বন্ধ করে দেই। তারপর একদিন দিনাজপুরে এক আপুর সাথে দেখা হয়, আর সেখানে উনার একটা কেক খেয়ে ছিলাম যেটার স্বাদ আমার অনেক ভালো লাগে । তখন থেকে আমার আগ্রহ জাগে কেক তৈরি করার ও শেখার।
তিনি আরও বলেন, আমি যখন কেক তৈরির প্রশিক্ষন নিয়ে থাকি তখন আমার কোর্স ফি দেওয়ার মতো টাকা ছিল না। আমি তখন কিছু টাকা লোন নিয়ে কেক এর ক্লাসে ভর্তি হই। কিন্তু আজ আমি ভাবি তখন যদি আমি খরচের ভয় করে পিছিয়ে যেতাম আজকে এই স্থানটা পেতাম না।
সিনথিয়া ঝলক আরও বলেন,কেক বানানো শেখার পর আমি “ংধহধ যড়সবসধফব পধশব ধহফ ভড়ড়ফ মধষষবৎু” নামে একটি পেজ তৈরি করি। অনলাইনে পোস্ট করি। সেখান থেকে অল্প অল্প অর্ডার পেতে শুরু করি। প্রথম প্রথম মাসে ৩, ৪ টা অর্ডার আসতো। কেনোনা তখন বোচাগঞ্জের মানুষের কাছে এই কেক গুলো অনেক দামি মনে হতো। কিন্তু যখন তারা কোয়ালিটি আর স্বাদ বুঝতে শুরু করলো তখন আমার অর্ডার বাড়তে শুরু করে। এখন আমি দিনে ৭,৮ টা কেক অর্ডার পেয়ে থাকি। কখনও কখনও ২০ থেকে ৩০ পাউন্ড ও অর্ডার পেয়ে থাকি।
তিনি বলেন, হোমমেড কেকের প্রতি মানুষের ধারণা বদলেছে। তারা জানেন, ঘরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে কোয়ালিটি মানের কেক তৈরি করা যায়। আর বোচাগঞ্জে দিন দিন এসব কেকের চাহিদাও বাড়ছে।’
কোন ধরনের কেক বানাতে আপনি পারদর্শী, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন প্রকারের কেক তৈরি করে থাকি। তার মধ্যে ভ্যানিলা স্পঞ্জ কেক, চকলেট স্পঞ্জ কেক, রেড ভেলভেট স্পঞ্জ কেক, অরেঞ্জ ডিলাইট স্পঞ্জ কেক, স্ট্রবেরি স্পঞ্জ কেক, ব্যাক ফরেস্ট স্পঞ্জ কেক, হোয়াইট ফরেস্ট স্পঞ্জ কেক, মার্বেল কেক, কাপ কেক সহ বিভিন্ন ডিজাইনের কেক তৈরি করে থাকি। এছাড়াও আমি ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী হুবহু ডিজাইন সংবলিত কেক তৈরি করে দিয়ে থাকি, যা বতর্মানে বোচাগঞ্জ উপজেলাসহ আশেপাশের উপজেলার মানুষও আমার তৈরি কেকের স্বাদ নিচ্ছে। আশা করছি আমার দেয়া প্রশিক্ষন গহন করে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীরা নিজ কর্মদক্ষতায় এগিয়ে যাবে সাফল্যের উচ্চ শিখরে।
Leave a Reply