দৈনিক দক্ষিণের অপরাধ সংবাদ
বিশেষ প্রতিনিধি
মোঃ শাহিন হাওলাদার
নাটোরের জনসেবা হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও জেলা বিএমএ সভাপতি ডা. এ এইচ এম আমিরুল ইসলাম (৫০) ত্রিভুজ প্রেমের জেরে তার ব্যক্তিগত সহকারী আসাদুল ইসলাম মিয়ার (২৬) হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, শহরের মাদরাসা মোড়ে অবস্থিত হাসপাতালের এক নারী সেবিকার প্রেমে পড়েন ডা. আমিরুল ইসলাম। তবে ওই সেবিকার সঙ্গে আগে থেকেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে ছিলেন সহকারী আসাদুল। এ নিয়ে গত ২৫ আগস্ট চিকিৎসক তার সহকারী ও ওই সেবিকাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। পরে আসাদুল নিজ গ্রাম বগুড়ার ধনুট উপজেলায় ফিরে গিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। সেখান থেকে তিনি একটি কালো বোরখা ও দুটি ধারালো ছুরি কিনে নাটোরে ফিরে আসেন।
নিজের কাছে চাবি থাকার সুবাদে ঘটনার রাতে হাসপাতালের শয়নকক্ষে আগে থেকেই লুকিয়ে ছিলেন আসাদুল। চিকিৎসকের সঙ্গে প্রেমিকার ঘনিষ্ঠতা ও চাকরি হারানোর ক্ষোভ থেকেই তিনি পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটান বলে পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। শিগগিরই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশ নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের সিংড়া উপজেলার শেরকোল এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যায় ব্যবহৃত দুটি ছুরি উদ্ধার করেছে। তবে আসামির ফেলে দেওয়া বোরখাটি এখনো উদ্ধার সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় নিহত চিকিৎসকের স্ত্রী তাসমিন সুলতানা বাদী হয়ে নাটোর থানায় মামলা করেছেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তার স্বামীকে গলা কেটে এবং পুরুষাঙ্গ কেটে হত্যা করা হয়েছে। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন থানার এসআই জামাল উদ্দিন।
ঘটনার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাসপাতালের তিন সেবিকাসহ পাঁচজনকে আটক করলেও শেষ পর্যন্ত মূল আসামি আসাদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আপাতত তাকেই একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে মামলায় দেখানো হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার আছরের নামাজের পর নাটোর পৌরসভার ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় গাড়ীখানা কবরস্থানে ডা. আমিরুল ইসলামের দাফন সম্পন্ন হয়।
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে শহরের মাদরাসা মোড়ে নিজ হাসপাতালের তৃতীয় তলা থেকে চিকিৎসকের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
Leave a Reply