মোঃ আশরাফ ইকবাল পিকলু মাজমাদার
খুলনা বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান।
যে বস্তু অধিক পরিমানে নেশা সৃষ্টি করে, তার সামান্য পরিমাণও হারাম সহীহ মুসলিম শরীফের এই বাণীকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ায় ফকির লালন শাহ্ এর আখড়াবাড়িতে মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর ২০২৫) বাদ আসর কুষ্টিয়া এন.এস. রোড সংলগ্ন পাবলিক লাইব্রেরির সামনে কুষ্টিয়ার সর্বস্তরের জনগণ এর আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা শারাফাত হুসাইন।মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আল-খিদমাহ অর্গানাইজেশন কুষ্টিয়ার সভাপতি হৃদয় হাসান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুষ্টিয়া জেলা শাখার সেক্রেটারি ফরিদ উদ্দীন আবরার,বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আরিফুজ্জামান এবং জেলা সভাপতি আবদুল লতিফ খান।
বক্তারা বলেন,লালন শাহ্-এর আখড়া একটি আধ্যাত্মিক সাধনার কেন্দ্র,অথচ সেখানে মাদক সেবন ও বেচাকেনার মতো অনৈতিক কার্যকলাপ ঘটছে—এটি ধর্ম,সংস্কৃতি ও সমাজের জন্য লজ্জাজনক।” তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত এসব মাদক কার্যক্রম বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
বক্তারা আরও বলেন, মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয়, গোটা সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। তাই লালন আখড়াসহ কুষ্টিয়ার সর্বত্র মাদক নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন হতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন ও মাদক ব্যবহার অব্যাহত থাকলে ঐতিহ্যবাহী লালন শাহের মাজারের গাঁজার আড্ডা খানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
তারা অভিযোগ করেন, তত্ত্বাবধানক্ষম কর্মকর্তারা জনতাকে প্রতিহত করার ক্ষমতায় অনীহা বা অক্ষমতা প্রদর্শন করছেন, যা লক্ষ লক্ষ তরুণ প্রজন্মের অধঃপতন ঘটাচ্ছে।
এক বক্তা বলেন,তৌহিদ জনতাকে প্রতিহত করার ক্ষমতা প্রশাসনের নেই। এই গাঁজা সেবনের মাধ্যমে হাজার হাজার যুবসমাজ ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে।
শুধু গাঁজাই নয়,যেকোনো মাদকদ্রব্য ইসলামে হারাম।
অন্য এক বক্তা যোগ করেন,প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন বন্ধ না হলে আমাদের অধিকার থাকবে মাজার রক্ষার নামে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার।
আয়োজকরা সরকারকে উদ্দেশ্য করে দুটি বিকল্প প্রস্তাব দেন—অথবা সরকারিভাবে গাঁজা অবমুক্ত করা হোক, নতুবা আইনানুগভাবে গাঁজা সম্পূর্ণরূপে অবৈধ ঘোষণা করে প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
তবে মানববন্ধনে উচ্চারিত কিছু হুমকি ও মাজার ভাঙার মতো বক্তব্যে স্থানীয় নাগরিক ও সংস্কৃতি অঙ্গনের ব্যক্তিদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা বলেন, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংসের হুমকি কোনো সমাধান নয়; বরং শিক্ষা,পুনর্বাসন ও আইনি প্রয়োগের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে মানববন্ধনের সময় প্রশাসনের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় নাগরিক সমাজ ও ধর্মীয় নেতারা দ্রুত বিষয়টি বিবেচনা করে শান্তিপূর্ণ ও আইনি উপায়ে স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন।
মানববন্ধনে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন সামাজিক,ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply