মোঃ আশরাফ ইকবাল পিকলু মাজমাদার
খুলনা বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান।
কুষ্টিয়া জেলার ঐতিহাসিক হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে শান্ত নদী হঠাৎ হয়ে ওঠে তাণ্ডবক্ষেত্র।
স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টু,তার ভাই মেহেদী এবং আবু সাঈদ খানের নেতৃত্বে গঠিত এক সন্ত্রাসী বাহিনী প্রকাশ্য দিবালোকে নিরীহ মাঝিদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
মাঝিদের উপর চলে বেধড়ক মারধর, ভাঙচুর আর চাঁদা আদায়ের উন্মাদনা।
আহত এক মাঝির কণ্ঠে বুকফাঁটা আর্তনাদ আমি শুধু নৌকা ঘুরাচ্ছিলাম ভাই,হঠাৎ মেহেদী-পিন্টুর লোকজন এসে আমাকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দিল!
আরেক মাঝি বলেন, ওরা চিৎকার করে বলে ‘টাকা দে, ভাসানের টাকা দে!’ তারপর আমাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে।
দৌলদিয়া-টু-রাজশাহী নৌচ্যানেলের বৈধ ইজারাদার প্রতিষ্ঠান গ্রুপঅন সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড”-এর সহকারী পরিচালক সোহেল খন্দকার ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের দেখতে পান। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন
এটা শুধু চাঁদাবাজি নয়, এটা রাষ্ট্রের আইনের উপর সরাসরি আঘাত! মাঝিদের উপর নির্মম নির্যাতন চলছে, অথচ নৌ পুলিশ নীরব!
তার দাবি, চাঁদার টাকা ভাগ হয় তিন ভাগে
এক ভাগ সাঈদ খানের কাছে, এক ভাগ মেহেদী-পিন্টুর কাছে, আরেক ভাগ নৌ পুলিশের হাতে।
অন্যদিকে নৌ পুলিশের অফিসার ইনচার্জ বলেন,এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। কেউ অভিযোগ করলে আমরা তদন্ত করব।
কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায় নৌ পুলিশের চোখের সামনেই এই তাণ্ডব এমন“ঘটনা হয়,
তাহলে আহতরা কার হাতে রক্তাক্ত হলো?
হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে আজ নদীর জলও লাল হয়ে আছে মাঝিদের রক্তে।
প্রশাসনের নীরবতা যেন আরও ভয়াবহ প্রশ্ন তুলে দেয়
এই দেশের নদীতে এখন মাঝিদের বাঁচার অধিকার কি শেষ হয়ে যাচ্ছে?
গত ০৪-১০-২৫ ইং তারিখের পর থেকে প্রকাশ্যে নদীতে চলছে চাঁদাবাজির মহোৎসব। নদীতে নেমে জীবিকা নির্বাহ করা গরিব মাঝি-মাল্লা আজ ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছে না। দিন এনে দিন খাওয়া এসব পরিশ্রমী মানুষের জীবনে নেমে এসেছে অন্ধকার। নৌকা বেঁধে রাখতে হচ্ছে ঘাটে, সন্তানদের মুখে তুলে দেওয়ার মতো অন্নও জুটছে না। প্রশাসনের নীরবতা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে তাদের হতাশা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা নদীকে বাঁচিয়ে রাখে,আজ তারাই নদীর বুকে অসহায়। সরকার ও প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি—নইলে এ নদী আর নদীপাড়ের মানুষ অনাহারে মরবে।
Leave a Reply