মোঃ বিজয় চৌধুরী
আবহাওয়া অনুকূলে নেই। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, নদী উত্তাল। নালঞ্চ স্টিমারে যাতায়াত এখন প্রাণনাশের শামিল। তবুও অনেকেই বাধ্য হচ্ছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নদী পাড়ি দিতে। কারণ, একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্যদিকে মানবসৃষ্ট অব্যবস্থা—এরই মাঝে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে এক অসহায় মানুষ।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের তিনতলায় বিনা চিকিৎসায় ছটফট করছেন এক অসহায় রোগী—এরশাদ নামের এই ব্যক্তি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন, অথচ পাশে নেই কোনো চিকিৎসক, নেই ওষুধ, নেই জরুরি চিকিৎসা সুবিধা। একটি স্যালাইন পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে না দিয়ে রোগীর পরিবারকে কিনে আনতে হয়েছে বাইরের দোকান থেকে।
সরকারি বরাদ্দকৃত ওষুধ নেই, নেই প্রয়োজনীয় পরীক্ষার যন্ত্রপাতি, নেই অভিজ্ঞ সার্জন। অথচ এই হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাসিক বেতন চলে জনগণের কষ্টার্জিত ট্যাক্সের টাকায়। প্রশ্ন উঠেছে—এই টাকায় যদি একজন অসহায়, দরিদ্র রোগী ন্যূনতম চিকিৎসাটুকুও না পান, তবে এই প্রতিষ্ঠান চালিয়ে রাখারই বা প্রয়োজন কী?
একজন মানুষের জীবনের মূল্য যদি এমন করুণ অবহেলায় মাপা হয়, তাহলে মানবতার স্থান কোথায়? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতেই রোগীর স্বজনরা বাধ্য হচ্ছেন শত ঝুঁকি নিয়ে বাউফল উপজেলা থেকে ভোলা জেলায় ছুটে যেতে।
এ যেন এক চরম বাস্তবতার ছবি—যেখানে রাষ্ট্রের সেবাপ্রতিষ্ঠান ব্যর্থ, আর মানবতা হারিয়ে ফেলেছে তার মুখচ্ছবি।
Leave a Reply