
মোঃ আশরাফ ইকবাল পিকলু মাজমাদার
খুলনা বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান।
শীতের আগমনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে গ্রামবাংলায়। অগ্রহায়ণ মাসের শুরুতেই কুষ্টিয়ার গ্রামীণ জনপদে জেগে উঠেছে খেজুর রস সংগ্রহের ব্যস্ততা। শতবছরের ঐতিহ্যকে ধারণ করে ভোরের কুয়াশা ভেজা মাঠে,রাস্তার ধারে কিংবা গৃহস্থের উঠোনে খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছীরা।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালে সরজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়,গাছে বাঁধা মাটির হাড়ায় রাতভর ঝরে পড়েছে টসটসে মিষ্টি রস। ভোরের আলো ফুটতেই সেই রস সংগ্রহে নেমে পড়ছেন গাছীরা। ঠান্ডা হাওয়া আর শিশিরভেজা পরিবেশে এ দৃশ্য শীতের আগমনের বার্তা আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।
শহরে শীতের প্রভাব সীমিত হলেও গ্রামাঞ্চলে সন্ধ্যা হলেই কুয়াশা নেমে আসে। তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে গেছে খেজুর রসের চাহিদা। কুষ্টিয়া বাইপাস সড়কের পাশে ঢাকা ঝালুপাড়া এলাকায় প্রতিদিনই ভিড় জমছে রসপ্রেমীদের। নারী-পুরুষ,তরুণ-প্রবীণসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এই মৌসুমি স্বাদ নিতে ছুটে আসছেন। কেউ গ্লাসভর্তি কাঁচা রস পান করছেন,আবার কেউ হাড়াভর্তি রস কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়ি।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন,এবার রস ও গুড়ের বাজারও বেশ জমজমাট। বর্তমানে প্রতি কেজি খেজুরের গুড় ও পাটালি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। বড় হাড়া রস ৪০০ টাকা,ছোট হাড়া ২০০ টাকা এবং এক গ্লাস কাঁচা রস ১৫ টাকা। এক লিটার কাঁচা রস বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়,যা কিনতে প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন।
গ্রামীণ জীবনের এই অনন্য স্বাদ ও ঐতিহ্য কুষ্টিয়ার মানুষের সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। খেজুর রস সংগ্রহ শুধু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নয় এটি শীতের সঙ্গে যুক্ত এক উৎসবমুখর আবহ,যা কুষ্টিয়ার গ্রামীণ জনপদে নতুন প্রাণ সঞ্চার করে।
Leave a Reply