
বিজয় চৌধুরী(বিশেষ প্রতিনিধি)
জনপ্রিয় ইউটিউবার, কনটেন্ট নির্মাতা এবং অনলাইন জগতে আলোচিত মুখ তৌহিদ আফ্রিদিকে বরিশাল থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। মামলাটিতে তিনি ১১ নম্বর আসামি হিসেবে তালিকাভুক্ত।
সিআইডি’র একাধিক সূত্র জানায়, রোববার (২৪ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বরিশাল নগরীর বাংলাবাজার এলাকায় একটি পরিকল্পিত ও বিশেষ অভিযান চালিয়ে তৌহিদকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতারের পরপরই ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
রাজনৈতিক সহিংসতা থেকে হত্যা মামলা২০২৫ সালের শুরুতে রাজধানী ঢাকায় একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশের গুলিতে এক আন্দোলনকারী নিহত হন। ঘটনার পর যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়, যেখানে রাজনৈতিক অঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করা হয়।
মামলার বাদী দাবি করেছেন, এ ঘটনায় পরিকল্পিতভাবে একদল ব্যক্তি সহিংসতা ছড়াতে ভূমিকা রাখেন এবং এতে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত ছিলেন।
শীর্ষ তিন আসামি কারা?
মামলার সবচেয়ে আলোচিত দিক হলো এর শীর্ষ তিন আসামির নাম। মামলার তালিকায় প্রথমেই রয়েছেন—
দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,
সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের,
এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরীআব্দুল্লাহ আল মামুন।
এই তিনজনের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রশ্রয় দেওয়া ও ঘটনার পেছনে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’ থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
তৌহিদের সঙ্গে গ্রেফতার তার বাবা নাসির উদ্দিন
তৌহিদ আফ্রিদির বাবা, মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীও এই মামলার আসামি। তিনি মামলার ২২ নম্বর আসামি হিসেবে চিহ্নিত। গত ১৭ আগস্ট ২০২৫ তারিখে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাকে গ্রেফতার করে। এরপর থেকেই মামলাটি নতুন করে আলোচনায় আসে।
নাসির উদ্দিনের গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টতা এবং তৌহিদ আফ্রিদির অনলাইন জনপ্রিয়তা—দুই মিলে এই মামলার সামাজিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়।
তদন্ত ও পরবর্তী পদক্ষেপসিআইডি জানিয়েছে, মামলার তদন্ত এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তৌহিদ আফ্রিদিকে রিমান্ডে নেয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হতে পারে বলেও জানা গেছে।
গণমাধ্যম ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া
তৌহিদ আফ্রিদির গ্রেফতার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তার ভক্তরা যেমন এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করছেন, তেমনি অনেকেই মামলার প্রক্রিয়াকে আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
Leave a Reply