হাফিজুর রহমান (যশোর)প্রতিনিধি
যশোরের কেশবপুরের সেই বহুল বিতর্কিত মিনি মেডিকেল কলেজ খ্যাত সুপারস্টার মেডিকেল এন্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে অভিযান পরিচালনা করে বন্ধ করে দিয়েছে ভ্রম্যমান আদালত। রোববার বিকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরিফ নেওয়াজের নেতৃত্বে একটি টিম ওই প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার জন্য কোনো বৈধ্য কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হলে সেটি বন্ধ ঘোষণা করে ভ্রম্যমাণ আদালত। একই সাথে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মিলন হোসেনকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কেশবপুর মাইকেল রোড পশুহাটের বিপরীতে খুলনার একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে অনুমোদন নিয়ে মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম চলে আসছিলো। সাইনবোর্ডে ও প্রচার লিফলেটে ব্যবহার করছিলেন প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত। যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর কেএইসসি-২৫৩৯। আর শিক্ষার্থী ভর্তি করছিলেন, ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি, ডিপ্লোমা ইন ক্লিনিক্যাল নার্স, ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল এ্যাসিসট্যান্ট, ডিপ্লোমা ইন মাদার এন্ড চাইল্ড হেলথ্ কেয়ার, ডিপ্লোমা ইন ডেন্টাল কেয়ার, ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ল্যাবরোটারী টেকনোলজিস্ট, পল্লী চিকিৎসক, লোকাল ইউনানী মেডিসিন প্রাকটিশনার, ফ্রিল্যান্সিং, ফার্মেসিসহ একধিক মেডিকেল বিষয়ে। অথচ প্রতিষ্ঠানটি সরকারি অনুমোদন প্রতিষ্ঠান ‘ম্যাটস্’ থেকে অনুমদিত নয়। সব থেকে ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে, যাদের নিজেদের সরকারি কোনো অনুমতিপত্র নেই তারাই আবার সারাদেশে শাখা অফিস খোলার অনুমতি নিচ্ছেন। আর শাখা অফিস গুলো দাবি করছে, তাদের এখান থেকে এনামটী ফিজিওলজি, ফার্মোকোলজী, মেডিসিন, গাইনী এন্ড অবস্, মা ও শিশু স্বাস্থ্য ও সার্জারি এবং প্যাথলজি কোর্স করানো হয়। যা আদেও সম্ভব নয়। সরকারি বা বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করার পর শিক্ষার্থীদের ইন্টার্ণ শেষ করতে হয়। তারপর শিক্ষার্থীরা সরকার অনুমোদিত সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে এ সকল ডিগ্রি অর্জন করতে পারে।
অপর একটি সূত্র জানায়, সুপারস্টার মেডিকেল এন্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউ সরকারি আদলে নিজেরাই ওয়েব সাইট তৈরি করেছন। সেখান থেকে চালানো হয় তাদের বিভিন্ন প্রচার প্রচারণা। এ প্রতিষ্ঠান থেকে পাশকরা শিক্ষার্থীদের ফলাফল নিজেদের সাইটে প্রকাশ করা হয়। শিক্ষার্থীদের বিশ্বাস অর্জন করতে এই প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়েছে। সরকারি অনুমদিত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করলে ওই শিক্ষার্থীর ফলাফল সরকারি সাইটেই প্রকাশ করা হয়। প্রধান কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা হলেও শাখা অফিস গুলো যাতে নতুন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে না পারে সেই দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
কেশবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরিফ নেওয়াজ জানান, এ সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া কাউকে কার্যক্রম চালাতে দেয়া হবে না।
Leave a Reply