মোঃ অনিকুল ইসলাম উজ্জ্বল
বরগুনার আমতলী উপজেলার উত্তর কালামপুর হাতেমিয়া দাখিল মাদ্রাসা বর্তমানে চরম শিক্ষার্থী সংকটে ভুগছে। মাদ্রাসাটিতে বর্তমানে ১৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত থাকলেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ১৫ জন। এই অসামঞ্জস্যের কারণে সরকারের বার্ষিক অর্ধ কোটি টাকা ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র এবং মাদ্রাসা কমিটির মধ্যে দ্বন্দ্ব, শিক্ষকদের অনুপস্থিতি এবং মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ অনিয়মের কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার কামরুজ্জামান কবির দাবি করেছেন, বর্ষার মৌসুমে শিক্ষার্থী কম আসে, তবে স্থানীয়দের অভিযোগ ভিন্ন।
মাদ্রাসাটি ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা অনিয়মের শিকার। গত বছর মাদ্রাসা থেকে ৩৭ জন পরীক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিলেও মাত্র ৭ জন উত্তীর্ণ হয়। চলতি বছর পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ৩৬ জন শিক্ষার্থীর তালিকা থাকলেও উপস্থিতি মাত্র ২ জন।
মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শাখায় শিক্ষার্থী সংখ্যা নেই বললেই চলে। কাগজে কলমে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী থাকলেও বাস্তবে সংখ্যাটি ১৫-২০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। মাদ্রাসার পরিবেশ আরও খারাপ করেছে নৈশপ্রহরী আব্দুল জলিলের আচরণ, যিনি শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং শিক্ষকদের চেয়ার দখল করে বসে থাকেন।
মাদ্রাসার সহসুপার মাওলানা ফারুক হোসেন শিক্ষার্থীর সংকটের জন্য আবহাওয়াকে দায়ী করেন। তবে মাদ্রাসার সাবেক সুপার মাওলানা আব্দুল হাই সরাসরি অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেছেন এবং বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সুপার কামরুজ্জামান কবিরকে দায়ী করেছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিয়াদ হাসান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান খান উভয়েই মাদ্রাসার অনিয়মের বিষয়ে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এ পরিস্থিতি শুধুমাত্র তদন্তের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
এই সংকটের সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। শিক্ষার্থী সংকট সমাধান না হলে এই মাদ্রাসার ভবিষ্যৎ অন্ধকার হতে পারে, যা শিক্ষার মানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
Leave a Reply