মোঃ অনিকুল ইসলাম উজ্জ্বল
বরগুনার তালতলী উপজেলায় ভাবী তানিয়া বেগমকে গলাকেটে হত্যার ১০ বছর পর এবার ছয় বছর বয়সী ভাতিজি নাহিল আক্তারকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন চাচা হাবিব ওরফে হাবিল খান। ঘটনার পরপরই হাবিলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাত ১১ টার দিকে নিহত শিশুর বাবা মো. দুলাল খান বাদী হয়ে তালতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর আগে একই দিন দুপুর ২ টার দিকে উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ইদুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত হাবিব ওরফে হাবিল খান মামলার বাদী দুলাল খানের আপন ছোট ভাই হওয়ায় তাঁরা একই বাড়িতে বসবাস করতেন। তবে হাবিব সার্বক্ষণিক নেশাগ্রস্থ থাকায় প্রায় সময়ই পরিবারের সদস্যদের গালিগালাজ করাসহ মারধর করতেন। ঘটনার দিন মঙ্গলবার দুপুরে শিশু নাহিল বাড়ির সামনে একটি মুদি দোকানে রুটি কিনতে যায়। এ সময় হঠাৎ হাবিব পিছন থেকে এসে একটি লাঠি দিয়ে নাহিলের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। এ সময় শিশুটি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক বাবা দুলাল খান ও স্বজনেরা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
শিশুটি আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকায় হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ রকিবুল ইসলাম বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটি মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই চাচা হাবিব ওরফে হাবিলকে স্থানীয় বাসিন্দারা ধাওয়া করে। এ সময় হাবিল একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশ এসে তাঁকে আটক করে নিয়ে যায়। হাবিল খান এ ঘটনার আগে ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে নিহত শিশুর বাবা বড় ও তার ভাই দুলাল খানের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগমকে গলা কেটে হত্যা করেন। ওই মামলায় শিশু আইনে তাঁর ৯ বছর সাজা হয়। সাজা ভোগ শেষে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে জামিনে মুক্তি পান। ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পরে ঘাতক হাবিল বড় ভাই দুলাল খানের দ্বিতীয় স্ত্রী ফাহিমা আক্তারের কন্যা নাহিলকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।
শিশুর বাবা দুলাল খান কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, ‘ও আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। ২০১৫ সালে আমার প্রথম স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করেছে। তখন ওর বয়স ছিল ১৭ বছর। শিশু আইনে ৯ বছর সাজা ভোগ করে ২০২৪ সালের প্রথম দিকে জামিনে মুক্তি পায়। জামিনে মুক্তি পাওয়ার দেড় বছরের মাথায় আমার শিশুকন্যাকে পিটিয়ে হত্যা করল। আমার শিশুকন্যা কী অপরাধ করেছিল? আমি এর বিচার চাই।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. টুকু শিকদার ও সালাম হাওলাদার বলেন, ‘ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা হাবিলকে ধাওয়া করলে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশ এসে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা আরও বলেন, হাবিল এর আগে তাঁর ভাইয়ের প্রথম স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করেছেন।’
তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুটির মাথার ডান পাশে এবং বাঁ হাতের কনুইয়ে গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল। তাৎক্ষণিক শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে জানা যায়, শিশুটি বরিশালে নেওয়ার পথেই মারা গেছে।’
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল বলেন, ‘হাবিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিশুটির মরদেহ থানায় রাখা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।’
প্রকাশক ও সম্পাদক : বাহাদুর চৌধুরী মোবাইল: ০১৩২৩০০২৩৭৭
সহসম্পাদক : মেহেদী হাসান হৃদয় মোবাইল:০১৬১০০৯৩৬২২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যলয়ঃ চৌধুরী কমপ্লেক্স, চেয়ারম্যান বাজার, চরফ্যাশন, ভোলা ।
মোবাইলঃ০১৩২৩০০২৩৭৭ ইমেইলঃ mh01610093622@gmail.com T.L.No:183 T.I.N:534926870539