
মোঃ অনিকুল ইসলাম উজ্জ্বল স্টাফ রিপোর্টার কলাপাড়া পটুয়াখালী
ছবির দৃশ্যটি বীজতলা কিংবা পানি নিষ্কাশন করে জলাশয়ে মাছ ধরা হচ্ছে এমনটা নয়, এটি একটি কর্দমাক্ত রাস্তা!
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের এলেমপুর গ্রামের এ রাস্তায় হাঁটু সমান কাদায় চলাচল করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। এখানকার এলেমপুর ব্রিজ থেকে ফরিদগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার মিটার রাস্তা একেবারে চলাচলের অনুপোযোগী।
রাস্তাটি কাঁচা হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ওই এলাকার সাধারণ মানুষ। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাটির কোনো কোনো স্থানে গর্ত হয়ে পানি জমে থাকে, আবার কোনো কোনো স্থানে হাঁটু সমান কাদা। কর্দমাক্ত এই রাস্তা দিয়ে চলাচলে ওই এলাকার কৃষক, শিক্ষার্থীসহ ৩ গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবারের মানুষকে জুতা খুলে ও হাটুর উপর কাপড় উঠিয়ে চলাচল করতে হয়।
অনেক সময় কাদা পানিতে পড়ে পোশাক ভিজিয়ে বাড়ি ফিরতে হয় শিক্ষার্থীদের। এতে বর্ষার সময়ে শিক্ষার্থীরা কাদা পানির ভয়ে নিয়মিত স্কুলে যেতে চায় না। শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, রাস্তার কারণে দূরাবস্থায় রয়েছে ৩ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। বিপাকে রয়েছে সবজি ও আমন চাষিরা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্বাধীনতা পরবর্তী কয়েক যুগ পেরিয়ে গেলেও রাস্তায় এখনো পড়েনি এক টুকরো ইট-পাথরের ছোঁয়া। সড়কটির পুরো অংশ জুড়ে হাঁটু সমান কাদা।
এলেমপুরের বাসিন্দা ৬৫ বছরের বৃদ্ধ রশীদ মোল্লা বলেন, আমার দেখা কত মেম্বার-চেয়ারম্যান গেল। কিন্তু কেউ রাস্তায় একটা ইটের কণাও দিল না। নাতিটা লইয়া কোলে কইরা স্কুলে দিয়া আই আবার লইয়া আই, কত কষ্ট।
বাচ্চা নিয়ে দুই হাত ধরে স্কুল থেকে ফিরছিলেন এলেমপুরের আরেক বাসিন্দা আ. বারেক (৪০) তিনিও আক্ষেপ করেন, প্রতিদিন বাঁচ্চা দুইডা ফরিদগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিয়া আই, আবার ছুটির পর নিয়া আই। আমাদের দুর্ভোগের আর শেষ নাই। কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবি, দ্রুত যেন রাস্তাটা পাকা করে দেয়। যাতে আমাদের ছেলে-মেয়েরা ঠিকমতো স্কুলে যাইতে পারে।
এলেমপুরের আরেক বাসিন্দা সবজি চাষি রইস উদ্দিন বলেন, প্রশাসনসহ সবাই জানে এলেমপুর ও কুমিরমারা গ্রাম হচ্ছে কলাপাড়ার সবজির প্রাণকেন্দ্র। দুঃখের বিষয়, এ পর্যন্ত একটাও ইটের কণাও এ রাস্তাটিতে পরে নাই। বহু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করেও কোনো সুরাহা পাইনি। প্রতিনিয়ত আমরা এভাবে কষ্ট করে রাস্তা দিয়ে চলাচল করছি। আশা করছি, কর্তৃপক্ষ অবশ্যই রাস্তাটি পাকা করবেন।
ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা পথচারী মৎস্য ব্যাবসায়ী রিমন মাতুব্বর (৪২) বলেন, আমি মাঝেমধ্যে এই রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াত করি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় উপজেলা শহর লাগোয়া এই রাস্তাটিতে এলাকাবাসীর এত দূর্ভোগ রাস্তাটি দিয়ে না হাটলে কেউ বুঝবে না।
ফরিদগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শাহআলম মিয়া বলেন, আমার চাকরির মেয়াদ প্রায় শেষ। কিন্তু কতবার চেষ্টা করলাম রাস্তাটি আজও পর্যন্ত কোন এমপি-মন্ত্রী করে দিল না। এখনও বর্ষা আসলেই স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যায়। যাবেই না কেন, ওই রাস্তা দিয়ে কেউ একবার গেলে আর যেতে চাইবে না। কারণ হাঁটু পর্যন্ত গেড়ে যায়।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ইয়াসীন সাদেক দৈনিক খবর সংযোগকে বলেন, রাস্তাটি সম্পর্কে আপনার মাধ্যমেই আমি অবগত হয়েছি। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বিধায় উপজেলা প্রকৌশলী এলজিইডিকে বিষয়টি অবহিত করব। তিনি বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক : বাহাদুর চৌধুরী মোবাইল: ০১৩২৩০০২৩৭৭
সহসম্পাদক : মেহেদী হাসান হৃদয় মোবাইল:০১৬১০০৯৩৬২২
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যলয়ঃ চৌধুরী কমপ্লেক্স, চেয়ারম্যান বাজার, চরফ্যাশন, ভোলা ।
মোবাইলঃ০১৩২৩০০২৩৭৭ ইমেইলঃ mh01610093622@gmail.com T.L.No:183 T.I.N:534926870539